ইসলামের পথে নতুন করে চলার শুরুতে যে পাঁচটি বিষয়ে আপনার পা ফসকে যেতে পারে
সচরাচর হয়ে থাকে এরকম কিছু ভুল, পদস্খলন ও বিচ্যুতি নিয়ে একটি আলোচনা
গত এক দশকের কিছু বেশি সময় ধরে বাঙালি মুসলিম পরিবারে জন্ম নেওয়া কিন্তু জীবনের একটা পর্যায় পর্যন্ত ইসলাম সম্পর্কে পুরোপুরি উদাসীন এরকম অনেক মানুষ আল্লাহর অশেষ রহমতে আবারও ইসলামের পথে চলতে শুরু করেছেন। আল্লাহর নাযিল করা জীবনবিধানকে নতুন করে ভালোবাসতে শেখা এই বিপুল সংখ্যক মানুষ তাদের শৈশবে পারিবারিক পরিমন্ডলে ইসলামের শিষ্টাচার ও মূল্যবোধ শেখার সুযোগ পাননি। ইসলাম শিখতে গিয়ে তারা যা পড়েছেন ও শুনেছেন সেখানে অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবতার চেয়ে তত্ত্ব বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার তীব্র দলান্ধ একদল ধর্মপ্রচারকের খপ্পরে পড়ে তাদের নিজেদের থেকে ভিন্ন মতের অনুসারী মুসলিমদের ঘৃণা করতে শিখেছেন। ফলে, জেনে বা না জেনে অনেক ভুল, পদস্খলন ও বিচ্যুতি ইসলামের পথে নতুন করে চলতে শুরু করা এসব মানুষের দ্বারা হয়েছে।
এরকমই কিছু ভুল, পদস্খলন ও বিচ্যুতি নিয়ে আজকের এই আলোচনা। ভুল ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সেবিষয়ে আমাদের করণীয় কী সেই প্রসঙ্গেও আলোকপাত করার চেষ্টা এখানে করা হয়েছে।
১. পড়াশোনা ও ক্যারিয়ারে অমনোযোগিতা:
ইসলাম পালনের ব্যাপারে নতুন করে আগ্রহী হওয়া তরুণ ও যুবকদের মধ্যে অনেকেই লেখাপড়া ও ক্যারিয়ারের প্রতি একরকম উদাসীন হয়ে পড়ে। স্রেফ দুনিয়াবী মনে করে এগুলোকে তারা তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখতে শুরু করে এবং ইবাদাত ও ধর্মীয় আচার-আচরণে অতিরিক্ত সময় দেওয়ার এক তীব্র আকাঙ্খা তাদের মধ্যে কাজ করে।
ইবাদাত ও ধর্মীয় আচার-আচরণের প্রতি তাদের অধিক মনোযোগী হওয়ার বিষয়টি প্রশংসনীয় হলেও পড়াশোনা ও ক্যারিয়ারের প্রতি নিরাসক্ত না হয়ে প্রকৃত ধার্মিক হওয়া যাবে না — অসংখ্য তরুণ ও যুবকের মনের মধ্যে বাসা বাঁধা এই ধারণাটি স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে সঠিক নয়। বরং, দুনিয়া ও আখিরাতের মধ্যে ভারসাম্য আনার ব্যাপারে আমাদের মানসিকতা হওয়া উচিৎ এরকম:
“আল্লাহ তোমাকে যা-কিছু দিয়েছেন তার মাধ্যমে আখিরাতের নিবাস লাভের চেষ্টা কর এবং দুনিয়া হতেও নিজ হিস্যা অগ্রাহ্য করো না। আল্লাহ যেমন তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন তেমনি তুমিও (অন্যদের প্রতি) অনুগ্রহ কর। আর পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করতে প্রয়াসী হয়ো না। নিশ্চিত জেন, আল্লাহ অনর্থ সৃষ্টিকারীদেরকে পছন্দ করেন না।” [কুরআন ২৮:৭৭]
পেশাগত জীবনে সঠিকভাবে কাজ করে যেতে পারলে বছরের পর বছর ধরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অনেক মানুষ আমাদের দ্বারা উপকৃত হতে থাকে। তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের আশায় এবং মানুষের উপকার করার নিয়তে এই কাজগুলো করে গেলে আল্লাহর কাছে এর জন্য উত্তম প্রতিদান আমরা অবশ্যই পাব। কাজ করে আমরা যে অর্থ উপার্জন করি তা দিয়ে আমরা আমাদের নিজেদের ও আমাদের পরিবারের ভরণপোষণের পিছনে ব্যয় করি। সঠিক নিয়তে এই খরচগুলো করে গেলে তার পুরোটাই আমাদের আমলনামায় দান হিসেবে লিপিবদ্ধ হতে থাকবে। এর বাইরে আল্লাহ চাইলে যাকাত ও নফল সদকা করার বাড়তি সুযোগ তো থাকছেই।
আমাদের উপার্জন যদি হালাল হয় আর আমাদের উপর অর্পিত প্রতিটি ফরযকে যদি আমরা মেনে চলি এবং আমাদের উপর হারাম করা হয়েছে এমন প্রতিটি বিষয়কে যদি আমরা বর্জন করতে পারি তাহলে নিছক দুনিয়াবী মনে করা পড়াশোনা ও ক্যারিয়ার থেকেও আমরা এমন অফুরন্ত সব কল্যাণ অর্জন করতে থাকব যা কাজ না করে একাকী বসে বসে নফল ইবাদাত করার মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব নয়।
ইসলাম পালনের দোহাই দিয়ে পড়াশোনায় ফাঁকি দেওয়া এবং পেশাগত জীবনে অমনোযোগী হওয়া কাম্য নয়। আল্লাহ আমাদেরকে যতটুকু সামর্থ দিয়েছেন তার মাধ্যমে হালাল উপায়ে দুনিয়ার এই জীবনে সফল হওয়ার জন্য চেষ্টা করতে হবে। একইসাথে, মৃত্যু পরবর্তী অনন্ত জীবনের জন্যও পাথেয় সঞ্চয় করে যেতে হবে।
২. বর্জনীয় বিষয় মাত্রই হারাম বলে মনে করা:
আমরা অনেকে খুব সহজেই বলে ফেলি যে, “এটা হারাম”, “ওটা গুনাহ”, “সেটা বিদআহ” ইত্যাদি। অথচ, একটু ভালোমতো অনুসন্ধান করলে হয়তো দেখা যাবে যে, আমরা যেমনটি দাবী করছে বিষয়টি আদৌ তেমন অকাট্য কিছু নয়, বরং সেই বিষয়ে আলেমদের মধ্যে বৈধ মতপার্থক্য আছে।
কোনো কিছুকে সরাসরি হারাম বলে ঘোষণা করে দেওয়া অনেক গুরুতর একটি বিষয়, কেননা কাজটি আসলেই যদি হারাম হয়ে থাকে এবং আমি সেই কাজটি করে বসি তাহলে আল্লাহ আমার উপর অসন্তুষ্ট হবেন। গুনাহটি থেকে তওবা না করলে আমাকে আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তিও ভোগ করতে হতে পারে।
যেহেতু কোনো কিছুকে হারাম বলে সাব্যস্ত করার সাথে আল্লাহর অসন্তুষ্টি সম্পর্কিত তাই এ সংক্রান্ত ঘোষণা সরাসরি আল্লাহর পক্ষ থেকে আসতে হবে। অন্যভাবে বললে, “এটি হারাম” — ঘোষণাটি কোনো প্রকার অস্পষ্টতা ব্যতিরেকে কুরআনে অথবা নির্ভরযোগ্য সূত্রে সঞ্চারিত হাদিসে থাকতে হবে। অমুকের মতে এটা হারাম, তমুকের মতে ওটা হারাম — ব্যাপারটা আদৌ এরকম নয়। তবে, কোনো বিষয়ে পূর্ববর্তী আলেমদের মধ্যে ইজমা হয়ে থাকলে সেটা স্বতন্ত্র বিষয়।
ইসলামে সুস্পষ্টভাবে হারাম বলে ঘোষণা করা হয়েছে এমন জিনিসের সংখ্যা খুব বেশি নয়। মাকরুহ, অপছন্দনীয়, বর্জনীয়, তাকওয়ার পরিপন্থী ইত্যাদি নানাবিধ শব্দ ব্যবহার করে কোনো একটি বিষয় থেকে মানুষকে নিরুৎসাহিত করা যেতেই পারে, কিন্তু আল্লাহ যাকে হারাম করেননি তাকে কোনো অবস্থাতেই হারাম হিসেবে উপস্থাপন করা যাবে না। এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে সাবধান করে দিয়ে আল্লাহ বলেন:
“তোমাদের মুখ থেকে সাধারণত যেসব মিথ্যা বের হয়ে আসে তেমনি করে তোমরা আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে বলো না যে, এটা হালাল এবং ওটা হারাম। নিশ্চয় যারা আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা আরোপ করে তাদের মঙ্গল হবে না।” [কুরআন ১৬:১১৬]
৩. কর্কশ ভাষায় কথা বলা:
অনলাইনে, বক্তৃতার মঞ্চে, ঘরোয়া আলোচনায় এবং আড্ডায় আজকাল এমন অনেক ইসলাম প্রচারকের দেখা মিলছে যাদের ভাষা কর্কশ ও আক্রমণাত্নক। এমনকি, তাদের থেকে খানিকটা ভিন্ন মতের অনুসারী মুসলিমদের প্রতি পর্যন্ত তাদের আচরণ মারাত্নক রকম অসহিষ্ণু। ইসলামের প্রচারক হতে ইচ্ছুক এরকম কোনো ব্যক্তির ভাষা ও দৃষ্টিভঙ্গি এমনটি হওয়া একেবারেই অনুচিত।
পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে নিকৃষ্ট স্বৈরশাসকদের মধ্যে একজন ছিল ফিরআউন। বনি ইসরাঈল গোত্রকে সে দাস বানিয়ে রেখেছিল। তার ঔদ্ধত্ব এক পর্যায়ে এত বেশি হয়ে গিয়েছিল যে, বনি ইসরাঈলের সদ্য ভূমিষ্ঠ প্রতিটি ছেলে শিশুকে সে হত্যা করতে শুরু করল। সৌভাগ্যক্রমে ফিরআউনের নিজের ঘরে লালিত-পালিত হওয়ার সুবাদে নবী মুসা (আ.) হত্যার হাত থেকে বেঁচে গেলেও তিনি ছিলেন এই বনি ইসরাঈল গোত্রের একজন সদস্য।
বিকৃত মস্তিষ্কের অধিকারী এরকম কুখ্যাত একজন স্বৈরশাসকের সামনেও কীভাবে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে নবী মুসা (আ.) ও হারুন (আ.)-কে উদ্দেশ্য করে তার নির্দেশনা আল্লাহ দিয়েছিলেন এভাবে:
“তোমরা উভয়ে ফিরআউনের কাছে যাও। সে সীমালঙ্ঘন করেছে। তোমরা গিয়ে তার সাথে নম্র কথা বলবে। হয়ত সে উপদেশ গ্রহণ করবে অথবা (আল্লাহকে) ভয় করবে।” [কুরআন ২০:৪৩-৪৪]
সে যত খারাপ লোক হোক না কেন, তার অতীত যত অন্ধকারাচ্ছন্ন হোক না কেন — তার সাথে নম্রভাবে কথা বলতে হবে। গালাগালি করা যাবে না। উত্তেজিত হওয়া যাবে না। মাথা গরম করা যাবে না। যিনি দাওয়াত দিচ্ছেন তার কাজ হলো ইসলামের মৌলিক বাণীকে যাকে দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে তার কাছে সুন্দরভাবে পৌঁছে দেওয়া।
আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, যিনি ইসলাম প্রচারক হিসেবে কাজ করছেন মর্যাদা ও জ্ঞানের দিক দিয়ে তিনি নবী মুসা (আ.)-এর চাইতে উত্তম নন। যাকে আহ্বান করা হচ্ছে তিনিও ফিরআউনের মতো অধম নন। অতএব, ইসলামের প্রচার করতে গেলে অবশ্যই নম্র আচরণ করতে হবে এবং ভাষার ব্যবহার সম্পর্কে সদা সচেতন থাকতে হবে।
৪. মতে না মিললে অন্যদের নিয়ে ব্যঙ্গবিদ্রূপ করা:
আড্ডার আসরে বা অনলাইনে মানুষকে নিয়ে ব্যঙ্গবিদ্রূপ করা আজকাল খুব সাধারণ একটি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। জিনিসটি আমাদের দৃষ্টিতে এত বেশি মামুলি হয়ে গেছে যে, এমনকি বাহ্যিকভাবে ধার্মিক ব্যক্তিরা পর্যন্ত এসব গর্হিত কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছেন। যারা নিজেরা এই অপকর্মের সাথে সরাসরি জড়িত নন তারাও সোশ্যাল মিডিয়াতে লাইক, শেয়ার, কমেন্ট ইত্যাদি উপায়ে অন্য মানুষের অপমান ছড়াতে ভূমিকা রাখছেন।
কেউ আবার ‘সৎকাজে আদেশ ও মন্দ কাজে নিষেধ’ মনে করে তাদের থেকে ভিন্ন মতের অনুসারী মুসলিম ব্যক্তিত্বদের নানাবিধ আপত্তিকর উপাধিতে ভূষিত করে আত্মতৃপ্তিতে ভুগছেন। প্রকৃতপক্ষে, অন্য মুসলিমদের মন্দ উপাধিতে অভিহিত করার কারণে তারা নিজেরাই হলেন বড় পাপাচারী।
হোক সে মুসলিম বা অমুসলিম, কোনো মানুষকে নিয়ে ব্যঙ্গবিদ্রূপ ও উপহাস করা একজন মুসলিমের পক্ষে শোভনীয় নয়। প্রতিটি মানুষের সম্মান ও মর্যাদার দিকে খেয়াল রাখা আমাদের সবার কর্তব্য। একজন মানুষ সারা জীবন ধরে যত ভালো কাজ করুক না কেন, পরনিন্দা, পরচর্চা, পরশ্রীকাতরতা — এসব দোষের কারণে পরকালে তার সব হিসাব বরবাদ হয়ে যেতে পারে। এ বিষয়ে আমাদেরকে সাবধান করে দিয়ে আল্লাহ বলেন:
“হে মুমিনগণ, কোনো পুরুষ যেন অপর পুরুষকে উপহাস না করে। সে (অর্থাৎ যাকে উপহাস করা হচ্ছে) তার চেয়ে উত্তম হতে পারে। এবং কোনো নারীও যেন অপর নারীকে উপহাস না করে। সে (অর্থাৎ যে নারীকে উপহাস করা হচ্ছে) তার চেয়ে উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অন্যকে দোষারোপ করো না এবং একে অন্যকে মন্দ উপাধিতে ডেক না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এসব থেকে বিরত না হয় তারাই যালিম।” [কুরআন ৪৯:১১]
৫. নিজের ও পরিবারের ব্যাপারে উদাসীনতা:
মুখে যতই ইসলামের বুলি আওড়াই না কেন, আমরা প্রায় প্রত্যেকে অন্যের সমালোচনা করতে ভীষণ ভালোবাসি। সমাজের কোনো স্তরের মানুষই আমাদের সমালোচনার তীর থেকে বাদ পড়ে না। এভাবে দিনের পর দিন কেবলই অন্যের সমালোচনা নিয়ে পড়ে থাকার ফলে গঠণমূলক কিছু আর আমাদের দ্বারা করা হয়ে ওঠে না। অন্যের পিছনে পড়ে না থেকে আমাদের উচিৎ আমরা নিজেরা কী করতে সক্ষম তা নিয়ে চিন্তা করা এবং আমাদের নিজেদের কাজটুকু সুচারুরূপে সম্পাদন করা।
এই প্রসঙ্গে প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল, আর সবাই তোমরা জিজ্ঞাসিত হবে নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে। ইমাম (অর্থাৎ, জনতার নেতা) একজন দায়িত্বশীল; তিনি তাঁর দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন। পুরুষ দায়িত্বশীল তার পরিবারের; সে জিজ্ঞাসিত হবে তার দায়িত্ব সম্পর্কে। স্ত্রী দায়িত্বশীল তার স্বামীর গৃহ ও সন্তানের; সে জিজ্ঞাসিত হবে তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে। মানুষের (দাস) ভৃত্য দায়িত্বশীল মনিবের সম্পদের, সে জিজ্ঞাসিত হবে তার মনিবের সম্পদ সম্পর্কে। অতএব, সতর্ক থেকো, তোমরা সবাই দায়িত্বশীল আর সবাই জিজ্ঞাসিত হবে নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে।” [বুখারি, মুসলিম, আবু দাউদ]
যেহেতু আমি আমার নিজের ব্যাপারে এবং আমার অধীনস্তদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হব তাই আমার নিজের ও তাদের পরকালীন মুক্তি কীভাবে অর্জিত হতে পারে সেটিই হওয়া উচিৎ আমাদের প্রত্যেকের চিন্তার প্রধানতম বিষয়। এই কথাটিই আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে এভাবে:
“হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবারবর্গকে রক্ষা কর সেই আগুন থেকে যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর। তাতে নিয়োজিত আছে কঠোর স্বভাব, কঠিন হৃদয় ফেরেশতাগণ, যারা আল্লাহর কোনো হুকুমে তাঁর অবাধ্যতা করে না এবং সেটাই করে যার নির্দেশ তাদেরকে দেওয়া হয়।” [কুরআন ৬৬:৬]
নিজে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচতে হবে। পরিবারে যারা আমাদের অধীনস্ত আছে এবং যারা আমাদের কথা শোনে তাদের সবাইকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচানোর জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে যেতে হবে। তারা যদি আমাদের কথা মেনে নেয় তাহলে তা তাদেরই কল্যাণে আসবে। আর তারা যদি আমাদের কথা না-ও শোনে তাহলেও তাঁর শাস্তি সম্পর্কে তাদেরকে সতর্ক করে দেওয়ার কারণে আল্লাহর সামনে জবাবদিহিতা করার হাত থেকে আমরা বেঁচে যাব।
নিজেকে বাঁচতে হবে। নিজের পরিবারকে বাঁচাতে হবে। নিজের ও পরিবারের পরকালীন নাজাতের কথা বিস্মৃত হয়ে দুনিয়া বদলের ছক কষা ও সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখা অলীক মোহ ছাড়া আর কিছুই নয়।